আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গ্লোবাল সাউথ বা বৈশ্বিক দক্ষিণের সদস্য হিসেবে চীন ইতিবাচকভাবে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা বেগবান করে, দৃঢ়তার সাথে অর্থনীতির বিশ্বায়ন ও বহুপাক্ষিকতাকে সমর্থন করে। বেশ কিছু বাস্তব সহযোগিতামূলক প্রকল্পের মাধ্যমে বৈশ্বিক দক্ষিণের সঙ্গে উন্নয়ন কল্যাণ অন্বেষণ করে, উভয়ের উপকার ও কল্যাণ বাস্তবায়ন করে।
সড়ক ও রেলপথ নির্মাণ সকল ক্ষেত্রে সমৃদ্ধি আনে। অবকাঠামোর আন্তঃযোগাযোগ হলো অর্থনৈতিক সমাজ উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি।
২০২৪ সালের ডিসেম্বর, বাংলাদেশের জনগণ ‘স্বপ্নের পথ’ হিসেবে রেলপথ প্রকল্প পদ্মা সেতু রেল লিঙ্ক চালু হয়, যা দেশটির রেলপথ উন্নয়নের নতুন অধ্যায় খুলে দিয়েছে। চালু করার পর দেশটির রাজধানী ঢাকা থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম শহর যশোরে যেতে আগের ১০ ঘন্টা থেকে ৩ ঘন্টায় নেমে এসেছে।
চীনা প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ ও সুবিধাজনক অগ্রাধিকারমূলক রপ্তানি ক্রেতার ঋণ সমর্থন দেওয়া বাংলাদেশের বৃহত্তম রেলপথ প্রকল্পটি অবকাঠামো ক্ষেত্রে চীন ও বৈশ্বিক দক্ষিণ সহযোগিতার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কিছু সংখ্যক প্রতীকী অবকাঠামো আন্তঃযোগাযোগ প্রকল্প বৈশ্বিক দক্ষিণে কার্যকর করে, গভীরভাবে এসব দেশ ও অঞ্চলের উন্নয়ন ট্র্যাক পরিবর্তন করছে।
জাকার্তা-বান্দুং হাইস্পিড রেলওয়ে মোট ৮ মিলিয়ন পর্যটক পরিবহন করেছে। চীন-লাওস রেলপথের মোট মালামাল পরিবর্তন পরিমাণ ৫৪ বিলিয়ন টন অতিক্রম করে এবং ৪৮.৬ মিলিয়ন পর্যটক পাঠিয়েছে। মোম্বাসা–নাইরোবি স্ট্যান্ডার্ড গেজ রেলওয়ে নিরাপদে পরিচালনার ৭ বছরের বেশি সময়ে, কেনিয়ার জন্য ৭৪ হাজার সরাসরি ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে। চ্যানকে বন্দর চালু হবার পর, পেরু থেকে চীনে আসার নৌ-পরিবহন সময় ২৩ দিন পর্যন্ত কমানো গেছে। লজিস্টিক মূল্য ২০ শতাংশের বেশি বাঁচানো গেছে।
অন্যদিকে, উজবেকিস্তানের রাজধানি তাসখন্দ শহরে, প্রশস্ত, উজ্জ্বল ও আরামদায়ক ‘চীনা উৎপাদন’ বিশুদ্ধ বৈদ্যুতিক বাস সড়কে একটি উজ্জ্বল দৃশ্যে পরিণত হয়েছে। এটি ঠিক চীনের জাতীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও উজবেকিস্তানের এনবিইউ ব্যাংকের সমর্থন করা তাসখন্দ নতুন জ্বালানি গণবাস প্রকল্প।
২০০৭ সাল থেকে মাদাগাস্কার চীনের সঙ্গে সংকর ধান প্রযুক্তিগত সহযোগিতা শুরু করে। বর্তমানে দেশটিতে চীনা সংকর ধানের আয়তন ৭৫ হাজার হেক্টরের বেশি। দেশটি ‘আফ্রিকান শস্যের গোলা’ লক্ষ্য বাস্তবায়নের গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্য আছে। সবুজ উন্নয়ন, কৃষি প্রযুক্তি স্থানান্তর, ডিজিটাল উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ চীন ও বৈশ্বিক দক্ষিণের সঙ্গে সহযোগিতা চালানোর গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে। এক একটি প্রকল্প সহযোগিতার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় দেশ দক্ষতা নির্মাণ জোরদার করতে সাহায্য দেয়, বৈশ্বিক দক্ষিণের উচ্চমানের উন্নয়নের অভ্যন্তরীণ বৃদ্ধি চালিকাশক্তি সরবরাহ করে।
বহু বছর ধরে, এআইআইবি, এনডিবি ও সিল্করোড ফান্ডসহ বিভিন্ন বহুপক্ষীয় আর্থিক সংস্থা স্থাপন ত্বরান্বিত করা, চীন-আফ্রিকান সহযোগিতা ফোরাম, চীন-লাতিন আমেরিকা ফোরাম ও চীন-আরব সহযোগিতা ফোরামসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ব্যবস্থার মাধ্যমে বৈশ্বিক দক্ষিণের সঙ্গে বাস্তব সহযোগিতা জোরদার করে, বৈশ্বিক দক্ষিণের উন্নয়ন ও পুনরুজ্জীবনকে সমর্থন করাটা বিশ্ব উন্নয়ন উদ্যোগ সহযোগিতার অগ্রাধিকার দিক হিসেবে, বিশ্ব উন্নয়ন ও দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা তহবিল স্থাপন করে, হাতে হাত রেখে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’-এর উচ্চমানের নির্মাণ করে চীন বৈশ্বিক দক্ষিণের সঙ্গে আরো ঘনিষ্ঠভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে, প্রকল্প সহযোগিতাকে ভিত্তি হিসেবে, বৈশ্বিক দক্ষিণের আরো গভীর ও বাস্তব উন্নয়ন ত্বরান্বিত করে।
বর্তমানের বৈশ্বিক দক্ষিণ, মোট অর্থনীতির পরিমাণ বিশ্বের ৪০ শতাংশের বেশি, বিশ্বের অর্থনৈতিক বৃদ্ধিতে অবদান হার ৮০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, বিশ্ব উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার গুরুত্বপূর্ণ শক্তিতে পরিণত হয়েছে এবং বিশ্ব আধুনিকায়ন প্রক্রিয়ায় আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
সূত্র: প্রেমা, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।
Leave a Reply