চীনের মৌলিক বিজ্ঞান উন্নয়ন একটি রোল মডেল: টারজান

সম্প্রতি টুরিং পুরষ্কার বিজয়ী বিজ্ঞানী রবার্ট টারজান চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি)-কে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে, বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনে মৌলিক বিজ্ঞান গবেষণার ভূমিকা এবং চীনের সাথে বিনিময় ও সহযোগিতা নিয়ে কথা বলেন।

চলতি বছরের ১৩ জুলাই বেইজিংয়ে আয়োজিত, আন্তর্জাতিক মৌলিক বিজ্ঞান সম্মেলনে, তিনি মৌলিক বিজ্ঞানের আজীবন সম্মাননা পুরস্কার লাভ করেন। ৩৮ বছর বয়সী রবার্ট টারজান এই পুরস্কার পাওয়া সবচেয়ে তরুণ বিজ্ঞানী।

সিএমজি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে টারজান বলেন, বেইজিংয়ে আয়োজিত এই মৌলিক বিজ্ঞান সম্মেলনের কেন্দ্রীয় বিষয় হল, গবেষণার পদ্ধতি শেয়ার করা। এমন বিনিময় শুধু নিজ নিজ সাবজেক্ট সম্পর্কিত নয়, বরং আন্তঃসাবজেক্ট বিনিময়ও বটে। এই সম্মেলন গণিতবিদ, পদার্থবিদ, ও কম্পিউটার বিজ্ঞানীদের মধ্যে সমৃদ্ধ ধারণা বিনিময়ের সুযোগ করে দেয় এবং এর সম্ভাবনা অনেক। বৈজ্ঞানিক গবেষণা ক্রমশ ক্রস-ইন্টিগ্রেশনের দিকে এগিয়ে চলেছে, এই সম্মেলন সেই প্রবণতার একটি প্রাণবন্ত প্রতিফলন।

চীনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্রুত উন্নয়নকে মূল্যায়ন করে টারজান বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উন্নয়নে চীন শুধু এআই ক্ষেত্রে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করছে না, বরং পুরো মৌলিক বিজ্ঞান ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছে। চীন মৌলিক বিজ্ঞানের উন্নয়নের ওপর দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগত অগ্রাধিকার দিচ্ছে, যা সত্যিই প্রশংসনীয়। এখন পর্যন্ত চীন যে সাফল্য অর্জন করেছে, তা অসাধারণ। সামনের দিকে তাকালে, আমি আরও অগ্রগতি প্রত্যক্ষ করার জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশ ত্বরান্বিত করার প্রক্রিয়ায়, চীনের সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক মূল সুবিধাগুলো সম্পর্কে টারজান বলেন, চীনের দীর্ঘস্থায়ী কৌশলগত সমর্থন; সুদৃঢ় বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকল্প শিক্ষাব্যবস্থা; এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা খুব উল্লেখযোগ্য।
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ২০৩৫ সালের মধ্যে চীনকে বিজ্ঞান ক্ষেত্রের শক্তিশালী দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য উত্থাপন করেছেন। এই সম্বন্ধে টারজান বলেন, তিনি আন্তরিকভাবে আশা করেন, এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে মৌলিক বিজ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।

সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক টারজান বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে একটি শক্তিশালী দেশ হিসেবে গড়ে ওঠার চীনা কৌশল এবং মৌলিক বিজ্ঞানের ওপর জোর দেখে তিনি মুগ্ধ। সমাজের উপকারের জন্য মস্তিষ্ক ব্যবহার করা, উদারভাবে ভাগাভাগি করা, উন্মুক্ত থাকা, এবং সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক থাকা এই বৈজ্ঞানিক চেতনাগুলো তিনি অন্যদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে বলেও আশা করেন। তিনি বলেন, বৈজ্ঞানিক জগতে, মানুষের মধ্যে, বিভিন্ন শাখার মধ্যে, এবং দেশের মধ্যে সহযোগিতা বিশেষভাবে মূল্যবান।

সূত্র : শুয়েই-আলিম-জিনিয়া, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।